প্রেক্ষাপট:
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর আস্তে আস্তে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব পড়লেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় এর হাত ধরে মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি এর অক্লান্ত পরিশ্রমে ডিজিটালি প্রস্তুত ছিল বলেই প্রযুক্তির সহায়তায় স্থবির হয়ে যায়নি বাংলাদেশের অর্থনীতি। চিকিৎসা, লেখাপড়া, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য সকল কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে প্রযুক্তির সহায়তায়।
ভ্যাকসিন বাংলাদেশে পৌঁছানোর পূর্বেই “জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কমিটি” আলোচনা করে কিভাবে এই টিকা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে প্রয়োগ করা হবে, কিভাবে সংরক্ষিত থাকবে তথ্য, কিভাবে পাওয়া যাবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সম্পর্কিত নানাবিধ পরিসংখ্যান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম পিএএ এর নেতৃত্বে এবং জেলা প্রশাসক, ঢাকা মোঃ শহীদুল ইসলাম এর তত্ত্বাবধানে আইসিটি অধিদপ্তরের ৫জন প্রকৌশলীর (মোঃ হারুন অর রশিদ, এ এস এম হোসনে মোবারাক, মোঃ আব্দুল্লাহ বিন ছালাম, আব্দুল্লাহ আল রহমান, মোঃ গোলাম মাহবুব) দলটি নিজস্ব উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় সরকারের কোন অর্থ ব্যয় ছাড়াই কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম “সুরক্ষা” প্রস্তুত করে।
করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহের শুরু থেকেই এই টিম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শুরু করে। উল্লেখ্য, এই টিম ইতোপূর্বে Central Aid Management System (CAMS) তৈরি করে, যার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকালীন সময়ে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ৫০ লক্ষ পরিবারের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে মানবিক সহায়তা ২৫০০/- টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে দ্রুততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।
২০২০ সালের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের টিকার অনুমোদন দেয়। বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সাথে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে টিকার স্বপ্ন আমরা দেখতে শুরু করি। টিকা কেনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা যেন জনগণের ভালোবাসার প্রতিদান। আর তাই তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন প্রাপ্তির জন্য অগ্রিম চুক্তি স্বাক্ষর করেন যাতে টিকা এলেই বাংলাদেশের জনগণ তা পায়।
আইসিটি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় তৈরি হয় বিশ্বমানের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম "সুরক্ষা", যা ইতিমধ্যে দেশে এবং বিদেশে বিপুল প্রশংসা অর্জন করেছে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশের সক্ষমতাকে প্রমাণ করে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
নাগরিক নিবন্ধন ও ভ্যাকসিন প্রদানসহ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় “সুরক্ষা” সিস্টেমটি ব্যবহৃত হচ্ছে। গত ২০২১ সালের ২৫শে জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সিস্টেমটি ব্যবহার এর জন্য উন্মুক্ত করা হয় এবং ২৭শে জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ৭ই ফেব্রুয়ারি হতে এই সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ ব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়।
উক্ত সিস্টেমটির উন্নয়ন এবং পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
সুরক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য -
বাস্তবায়নের সময়কাল – (২০২০-কার্যক্রম চলমান)
২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়। ঠিক তখনই বর্ণিত টিম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শুরু করে।
পরবর্তীতে “জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কমিটি” এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২০২০ এর ডিসেম্বর মাসে এই দলটি নিজস্ব উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় সরকারের কোন অর্থ ব্যয় ছাড়াই কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম “সুরক্ষা” প্রস্তুত করে।
২০২১ সালের ২৫শে জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সিস্টেমটি ব্যবহার এর জন্য উন্মুক্ত করা হয় এবং ২৭শে জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ৭ই ফেব্রুয়ারি হতে এই সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ ব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়।
“সুরক্ষা” কার্যক্রমঃ
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম "সুরক্ষা" কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারপূর্বক সংশ্লিষ্ট সেবা ক্ষেত্রে দ্রুততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়। এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণকারী সকল নাগরিকের একটি সচ্ছ ডাটাবেজ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের পরিসংখ্যান এই ডাটাবেজ থেকে পাওয়া সম্ভব হবে।
এই সিস্টেমের মাধ্যমে একজন নাগরিকের ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন, টিকা কার্ড সংগ্রহ, ভ্যাকসিন গ্রহণের তথ্য সংরক্ষণ এবং চূড়ান্তভাবে ভ্যাকসিন সনদ গ্রহণ করতে পারে যা পরবর্তীতে বিদেশ ভ্রমণে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
বর্তমানে সুরক্ষা সিস্টেমে ১২ বছর বা তদুর্ধ বয়সী শিক্ষার্থী এবং ১৮ বছর বা তদুর্ধ বয়সী সকল নাগরিক ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করতে পারছে। পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এর জন্য যোগ্য সকল নাগরিককে নিবন্ধনের আওতায় এনে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনের জন্য যোগ্য বাংলাদেশের প্রায় সকল নাগরিক সুরক্ষা সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশি সকল নাগরিক, ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব ছাত্র/ছাত্রী, প্রতিবন্ধী নাগরিক, বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মী, বিদেশগামী বাংলাদেশি ছাত্র/ছাত্রী এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক সহ সকল শ্রেণী-পেশার নাগরিক নিবন্ধন এবং ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুরক্ষা সিস্টেম ব্যবহার চলমান রয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস